Ad

DUE SLIP কা সরকার


লেখক- Taha Ali Khan

বর্তমান ভারতবর্ষে রাজনীতির পরিভাষা পাল্টে গেছে। বর্তমানে রাজনীতির পরিভাষা হয়েছে হিন্দু তোষণ আর মুসলিম তোষণ। একদিকে কেন্দ্র সরকার হিন্দু বহুসংখ্যকদের ধর্মের অজুহাতে মানুষদের ধর্মান্ধ করে দিয়েছে, যার ফলে সংখ্যালঘু সমাজের উপরে নেমে আসছে হিংসাত্মক আক্রমণ। অপরদিকে ভারতবর্ষের একমাত্র রাজ্য যার দিকে সারা দেশবাসী চেয়ে থাকতেন সেই রাজ্যের পরিস্থিতিও কেন্দ্র সরকারের নিতীই অবলম্বন করছে।
পশ্চিমবঙ্গের জনসংখ্যার 27 শতাংশেরও বেশী মুসলিম। অতএব মুসলিমদের ভোট যেনতেন প্রকারেণ চাই। তাই চমকদারি ঘোষণা। বর্তমানে আমাদের রাজ্যের শাসকদল এবং তার নেত্রী মুসলিমদের নাগরিক হিসাবে দেখা অপেক্ষা ভোটার হিসেবে দেখতে বেশী ভালোবাসেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন সংখ্যালঘুদের 90 শতাংশ কাজ করে দিয়েছেন। তিনি আরোও বলেছেন তিনি যা কাজ করে দিয়েছেন 400 বছরেও কেউ করতে পারবে না। আর সংখ্যালঘুদের বেশী সংখ্যক মূর্খ হওয়ার সুবাদে 'ইমাম ভাতা' নিয়ে ভাবছেন দিদি আমাদের সত্যিই 100% উন্নয়ন করে দিয়েছেন। কিন্তু তারা জানেন না এর পূর্বের সরকারের আমলেও যেসব মসজিদ ওয়াকফ বোর্ডে নথিভুক্ত আছে সেইসব 'ইমামরা' ভাতা পেতেন।
যাইহোক, আপনারা যদি প্রতীচী সংস্থার সহযোগিতায় 'অ্যাসোসিয়েশন স্নাপ এন্ড গাইডেন্স গিল্ড' তিন বছর ধরে সমীক্ষা চালিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম অনগ্রসরতার সম্পর্কে "Living Reality of Minority in West Bengal" নামক যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তাতে সরকারের ভাঁওতাবাজি আপনারা পরিষ্কার দেখতে পাবেন।
আসলে RRS, VJP, বজরঙ দলের সহযোগিতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার এই সরকারের রূপরেখাও কেন্দ্র সরকারের মতোই। তৃণমূল সরকারের আমলে সারা রাজ্যটাই চলে গেছে ডিউ স্লিপে। নারী নির্যাতন, ধর্ষনে রাজ্য প্রথম স্থান অধিকার করেছে। অপরাধীরা বহাল তবিয়তে ঘুরছে। পুলিশ তদন্তের রিপোর্ট সঠিক সময়ে জমা না পড়ায় বিচারদান ডিউ রয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের শিল্পের বিরোধিতা করে ক্ষমতায় আসার পরে ঘটা করে শিল্প সম্মেলন করেছেন। প্রতিশ্রুতির বন্যা বইয়ে দিয়েছেন, সিঙ্গাপুর-লন্ডন-মুম্বাই ছুটেছেন, কিন্তু সবকিছুই ডিউ পড়ে আছে। হালে মূখ্যমন্ত্রী "দীঘা" এসে "দীঘাশ্রী" প্রকল্পের ঘোষণা করেছেন। কিন্তু শঙ্করপুরের সরকারি বরফ কলের কর্মীরা গত 26 শা আগস্ট থেকে আমরণ অনশনে বসে আছেন, এখন পর্যন্ত 14 জনের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। কিন্তু সরকার, প্রশাসন সবাই নির্বিকার কারোর কোনো ইতিবাচক ভূমিকা দেখা যাচ্ছে না।
যতো শিল্প তালুকের ঘোষণা করা হয়েছে সবই এখন পর্যন্ত ডিউ পড়ে আছে। বৃদ্ধি পেয়েছে তোলা শিল্প, সিন্ডিকেট রাজ, বন্ধ হয়েছে শিল্পের দরজা। কর্ম সংস্থানের সুযোগ নেই। সরকারি কর্মচারীদের D.A. বছরের পর বছর ডিউ হয়ে পড়ে থাকছে। অথচ মুখ্যমন্ত্রী দুর্গাপূজা কমিটির ক্লাব গুলিকে ঢালাও টাকা দিয়ে তাদের বশীভূত করতে চাইছেন। ক্লাব গুলিকে এতো টাকা দিয়ে সরকার কি উদ্দেশ্য পূরণ করতে চাইছেন?
আসলে সরকার ভালো ভাবেই জানেন যাদের সহযোগিতায় ক্ষমতায় এসেছিলেন তারাই এখন তাকে গ্রাস করতে চলেছে। তাদের বিসর্জনের বাজনা বাজতে শুরু হয়ে গেছে। মুকুল, শোভন, সৌমিত্র, নিশীত প্রামাণিক, অনুপম হাজরা, দেবশ্রী চৌধুরী সহ বহু নেতা-নেত্রী, কর্মীরা দিদিকে ডিউ স্লিপ ধরিয়ে বলছেন 'এটা রাখুন, আর আমরা আপনাদের সঙ্গে নেই।'
কিন্তু কাকে বোঝাবেন? কে বোঝাবেন? এক্ষুনি দেখবেন এই আর্টিকলের মন্তব্যে কেমন কেমন কটূক্তি উড়ে আসবে। আর এইসব কটূক্তি করবেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরাই। কারণ "যারা অন্ধ, সবচেয়ে বেশী আজ চোখে দেখে তারা।"




Post a Comment

0 Comments