Ad

রিজিকের মালিক শুধুই আল্লাহ






রিজিক এর মালিক কে? মানুষ না অন্য কেউ? কোনো পির-মাশায়েখ কি রিজিকের মালিক? না কি অফিসের বস রিজিকের মালিক? কে আপনাকে আমাকে রিজিকের নিরবচ্ছিন্ন সরবারহ করেন। কখনইকি ভেবে দেখেছেন? আপনি এক বছরে কত টাকা আয় করবেন, কোন খাবার কতটুকু খাবেন— সব কিছুই এক আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। সকল প্রাণীর রিজিকের মালিক তিনি। কারো রিজিক কমানো-বাড়ানো সবই তাঁর এখতিয়ার। মানুষের রিজিক কমাতে মানুষ পারে না। যতটুকু আল্লাহ নির্ধারণ করেছেন, ততটুকুই কেবল মানুষ ভোগ করতে পারে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ অসংখ্য জায়গায় স্পষ্ট করে উল্লেখ করেছেন, কেবল তিনিই রিজিকের মালিক। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে ইচ্ছা তার রিজিক বর্ধিত করেন এবং যার জন্যে ইচ্ছা তা সীমিত করেন। আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক অবহিত। (সূরাআনকাবুত, আয়াত ৬২)।
হঠাত্ করে চাকরি চলে যেতে পারে। ব্যবসায় ক্ষতি হতে পারে। কিছুদিন পর আবার ব্যবসায় ব্যাপক উন্নতি হতে পারে। চাকরিতে হতে পারে প্রমোশন। এই উন্নতি অবনতিও আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত। তার নির্দেশেই এমনটা হয়। আর এটাও মানুষের জন্য শিক্ষণীয়। সূরা রুম আয়াত ৩৭ এ বলা হয়েছে, ‘তারা কি লক্ষ্য করে না যে, আল্লাহ যার জন্যে ইচ্ছা তার রিজিক প্রশস্ত করেন অথবা তা সীমিত করেন? এতে অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে মুমিন সম্প্রদায়ের জন্যে’। প্রকৃতিতে কিছু প্রাণী আছে। যারা খাদ্য মজুদ করে না। প্রতিদিনই খাবার সংগ্রহ করে খায়। এই সব প্রাণীর রিজিকের দায়িত্বও আল্লাহর। তিনি এদেরকে না খাইয়ে রাখেন না। এ প্রসঙ্গে সুরা আনকাবুতে বলা হয়েছে— এমন কতো জীবজন্তু আছে যারা নিজেদের খাদ্য মজুদ রাখে না; আল্লাহই রিজিক দান করেন তাদেরকে ও তোমাদেরকে এবং তিনি সর্বশ্রোতাসর্বজ্ঞ। (সূরা আনকাবুত,আয়াত ৬০)।
আল্লাহ যদি কারো রিজিক বন্ধ করে দেন, তবে তা চালু করার শক্তি কারো নেই। আল্লাহ বলেন- এমন কে আছে যে তোমাদের রিজিক দান করবে, যদি তিনি রিজিক বন্ধ করে দেন? বস্তুত তারা অবাধ্যতা ও সত্য বিমুখতায় অবিচল রয়েছে। (সুরা মুলক, আয়াত-২১)। আল্লাহর দেওয়া রিজিক থেকে আল্লাহর পথে ব্যয় করলে প্রতিদান আছে। প্রতিদান দিবেন আল্লাহ পাক। বল :আমার প্রতিপালক তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার প্রতি ইচ্ছা তার রিজিক বর্ধিত করেন অথবা ওটা সীমিত করেন। তোমরা যা কিছু ব্যয় করবে তিনি তার প্রতিদান দিবেন। তিনি শ্রেষ্ঠ রিজিকদাতা। (সুরা সাবা, আয়াত-৩৬)। হাদিস শরীফে এসেছে, যদি তোমরা আল্লাহ তায়ালার ওপর সঠিক ও যথাযথভাবে ভরসা করো, তাহলে তিনি তোমাদের পাখির মতো জীবিকা দান করবেন, ক্ষুধার্ত অবস্থায় সবাই বের হয় আর পেটভরে করে বাসায় ফিরে। (আহমদ, তিরমিজি)। মানুষ মানুষের কাছে সামান্য কারণে মাথানত করে। বেতন বা বোনাস বৃদ্বির জন্যে। যা সম্পূর্ণ নাজায়েজ। বস যত ক্ষমতাবানই হোক, তার কাছে মাথানত করা যাবে না। সত্ থেকে কাজ করতে হবে। ভরসা করতে হবে আল্লাহর ওপর। মনে প্রাণে বিশ্বাস থাকা দরকার রিজিক আল্লাহই বাড়িয়ে দিবেন। কাজ না করে হাত গুটিয়ে থাকলে হবে না। রিজিক তো আর এমননি এমনি বৃদ্ধি পেতে পারে না। হযরত ওমর (রা) বলেন, তোমাদের কেউ যেন জীবিকার সন্ধান না করে বসে বসে এ কথা না বলে, হে আল্লাহ আমাকে রিজিক দাও, কারণ তোমরা জান আকাশ কখনো স্বর্ণ বর্ষণ করে না। সুরা নুহ ১০ থেকে ১২ নাম্বার আয়াতে বলা হয়েছে তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয় তিনি পরম ক্ষমাশীল। (তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলে) তিনি তোমাদের ওপর মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, আর তোমাদেরকে ধনসম্পদ ও সন্তানসন্ততি দিয়ে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের জন্য বাগবাগিচা দেবেন আর দেবেন নদীনালা। (সুরা নুহ, আয়াত ১০-১২)। আর তাকে তার ধারণাতীত উত্স হতে দান করবেন রিজিক; যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর নির্ভর করে তার জন্যে আল্লাহই যথেষ্ঠ, আল্লাহ তাঁর ইচ্ছাপূরণ করবেনই, আল্লাহ সব কিছুর জন্যে স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা। (সুরা তালাক, আয়াত ৩)। হাদীসে এসেছে— যে ব্যক্তি অধিক পরিমাণে এসতেগফার পড়বে আল্লাহ তায়ালা তাকে সব দুশ্চিন্তা ও সঙ্কটাপন্ন অবস্থা থেকে মুক্ত করে দেবেন এবং ধারণাতীতভাবে তাকে জীবিকা দান করবেন। (আবু দাউদ)। তাই দুনিয়ায় সে যত বড়োই হোক না কেন। তার কাছে নয়। রিজিকের আল্লাহর কাছেই চাইতে হবে।


Post a Comment

0 Comments